1. akhterbw@gmail.com : Akhtaruzzaman Bhuyan : Akhtaruzzaman Bhuyan
  2. adminmonir@gmail.com : Monirul Islam : Monirul Islam
  3. jmitsolution24@gmail.com : support :

মেঘনাপাড় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

প্রিয় সুহৃদ,
আস্সালামু আলাইকুম।
মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের আসন্ন ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জানাই শুভেচ্ছা। লক্ষ্মীপুর জেলার মজু চৌধুরীহাটের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১৪ জুলাই ২০০৮ খ্রি. তারিখে এই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। কিছু শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির প্রচেষ্টায় প্রাথমিক স্কুল হিসেবে ধীবর বিদ্যানিকেতন যাত্রা শুরু করেছিল। বর্তমানে স্কুলে প্রায় ২২০+ শিক্ষাথী। ৭ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিবিড় পরিচর্যায় পাঠদান করছেন। ৫ম শ্রেণি শেষে শিক্ষার্থীরা অধিকাংশই পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। গুটিকয়েক শিক্ষার্থী হাইস্কুলে পড়ার সুযোগ পায়। এই ধীবর সন্তানদের চাহিদামাফিক এবং যুগের প্রয়োজনে কারিগরি বিদ্যালয় চালু করার একটি উদ্যোগ নিয়েছি। আপনাদের সবার সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।

মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের শুরুর কথা
লক্ষ্মীপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে মজু চৌধুরী হাটের অবস্থান। ভোলা-বরিশাল ফেরিঘাট এ স্থানে অবস্থিত। নদী শাসনের জন্য দুইটি স্লুইস গেট মেঘনা নদীর এই শাখাটিকে নিস্তরঙ্গ করে রেখেছে। ঢেউয়ের তীব্র স্রোত না থাকায় এখানে একটি ভাসমান জনগোষ্ঠী (বেদে নয় জেলে) আবাস গেড়েছে নদীতেই। প্রায় ৭০/৮০ বছর ধরে এখানেই তাদের বসবাস। নৌকাই তাদের জীবন জীবিকার বাহন।

দুইটি স্লুইস গেটের মাঝখান দিয়ে এক টুকরো স্থলভূমি নদীর বুকে কিছুদূর গিয়ে থেমে গেছে। এ স্থলটুকুকেই ঘিরে প্রায় ষাট সত্তরটি নৌকায় সমান সংখ্যক জেলে পরিবারের বসবাস। নদী ভাঙনে সব হারিয়ে একটি নৌকাকে সম্বল করেই তারা চলে এসেছে এ অঞ্চলে। সাথে আছে জাল। এই নৌকা নিয়ে সুদূর মেঘনার বুকে মাছ ধরতে চলে যায় তারা। সারা দিনব্যাপী মাছ ধরে। নৌকাতেই খাওয়া-দাওয়া। নৌকাতেই জীবন যাপন। সন্ধ্যার আগে ঘাটে এসে মহাজনকে মাছ বুঝিয়ে দিয়ে এ জায়গাটাতেই বিশ্রাম নেয় তারা। ছোট ছোট শিশুরাও বাবা-মায়ের সাথে নৌকাতেই অবস্থান করে।

নৌকায় ভাসমান পরিবারগুলোর পাশাপাশি বেড়িবাঁধে আরও সহস্রাধিক উদ্বাস্তু পরিবারের বাস। প্রতিটি নৌকা পরিবারে এবং উদ্বাস্তু পরিবারে ২/৩টি করে সন্তান। ভাসমান নৌকায় এবং বেড়িবাঁধে বসবাসকারী এ জেলে শিশুদের জন্য কতিপয় বিদ্যানুরাগীর সহায়তায় গড়ে তোলা হয় মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন। ১৪ জুলাই ২০০৮ সালে স্কুলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। দেখতে দেখতে প্রায় ১৫ বছর অতিক্রম করতে চলেছে স্কুলটি। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলে। কোভিড-১৯ প্যানডেমিকের আগ পর্যন্ত পাঁচটি ব্যাচ পিইসি (প্রাইমারি এডুকেশন সার্টিফিকেট) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রায় শতভাগ উত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়াও ধীবর স্কুল থেকে প্রাইমারি পাস করে অন্য হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী এসএসসিও পাস করেছে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ধীবর বিদ্যানিকেতন বিদ্যানুরাগীদের আর্থিক অনুদানে চলছে। প্রথম দিকে ছোট্ট একটি চালাঘর থেকে আজ ৬টি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে একটি পরিপূর্ণ প্রাইমারী স্কুল। বেশ কয়েক বছর আগে জেলা প্রশাসন থেকে স্কুলের জন্য তিনটি শ্রেণীকক্ষ, একটি পাকা টয়লেট এবং একটি টিউবওয়েল স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনেই পড়তো। অনেকে গরীব জেলে এ অর্থটুকুও দিতে পারে না। ফি বাবদ যে অর্থটুকু আদায় হয় তা দিয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো, শিক্ষা উপকরণ ক্রয়, পরিচালনা ব্যয় বাবদ লেগে যায়। একজন তত্ত্বাবধায়ক স্কুলটি দেখাশোনা করেন।

একনজরে ধীবর বিদ্যানিকেতন
স্কুলের নাম : মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন
ঠিকানা : মজু চৌধুরী হাট, লক্ষ্মীপুর।
প্রতিষ্ঠাকাল : ১৪ জুলাই ২০০৮ খ্রি.
স্কুলের নিজস্ব ভূমি : নেই। মেঘনা নদীর শাখার বুকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক টুকরো পরিত্যাক্ত স্থানে কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতিক্রমে স্কুলটি চলছে।
স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা : ২২০ +।
কোন ক্লাস পর্যন্ত পাঠদান : শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত
শিক্ষক সংখ্যা : ০৭ জন।
তত্ত্বাবধায়ক : ০১ জন।
শ্রেণিকক্ষ : ০৬ টি
অফিসকক্ষ ও টিচার্স কমনরূম : ০১টি
পাকা টয়লেট : ০৩টি
ডিপ টিউবওয়েল : ০১ টি
বিদ্যুৎ সংযোগ : আছে
তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ সুবিধা : আছে।
একটি প্রস্তাবঃ প্রাইমারি শাখা সহ পূর্ণাঙ্গ কারিগরি স্কুল স্থাপন প্রকল্প
মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের বয়স ১৫ বছর হলেও স্কুলটিকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনা যাচ্ছে না, কারণ স্কুলের নিজস্ব জায়গা নেই। বর্তমান স্কুলের কাছাকাছি মাত্র ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করে স্কুলটিকে একটি স্থায়ী রূপ দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছি বন্ধু এবং সুহৃদদের কাছে। কয়েকজন সুহৃদের সহায়তায় ‘মেঘনাপাড় ধীবর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং স্কুল’ পূর্ণ রূপ পেতে পারে। আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ধীবর বিদ্যানিকেতনকে কারিগরি স্কুলে উন্নীত করতে পারি। এ অঞ্চলের জন্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুবই উপযোগী হবে। সরকার কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে খুবই উৎসাহ প্রদান করছে। পাশাপাশি নানান সহায়তাও দিচ্ছে। এছাড়াও নিজস্ব ভবনে কারিগরি স্কুল স্থাপিত হলে সরকার এমপিওভুক্ত দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দেবে।

© Meghnapar  Foundation
Design & Developed BY JM IT SOLUTION